এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে বাঁধা পরবর্তী কয়েকদফা হামলা ও সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। ওইসময় বাঁধাদানকারী পক্ষের হামলায় বিদ্যালয়ের জমিদাতাপক্ষের অংশিদার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও তাঁর ছেলে গুরুতর আহত হয়েছে। আহত দুইজনকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (৭ অক্টোবর) সকাল দশটার দিকে ইউনিয়নের আমজাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘটেছে হামলার ঘটনা।
এদিকে সংর্ঘষের সময় ঘটনাস্থলে পৌঁেছ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আক্তার। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বাঁধাদানকারী পক্ষের আবুল কালাম নামের একজনকে আটক করেছে। পরে অবশ্য মুছলেকা দিয়ে পরিবার সদস্যরা তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে এনেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা কাইছার। তিনি বলেন, আমজাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের প্রস্তুতি নেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকাল ১০ টায় শহীদ মিনারটি নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করতে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরিজ এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গুলশান আকতার ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, উদ্বোধনি অনুষ্ঠানের শুরতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজে বাঁধা দেন স্থানীয় আইয়ুব মো ইকবাল এবং আবুল কালাম মেম্বার গং। ওইসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাদের কাছ থেকে বাঁধার কারন জানতে চান। পরে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। উভয়পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সিদ্বান্ত নেওয়া হয় বাধাদানকারী পক্ষের দাবিকৃত ডকুমেন্ট যথাযথ না হলেও বিরোধীয় ৯ শতক জায়গা বাদ দিয়ে অন্য জায়গায় শহীদ মিনার নির্মাণ উদ্বোধন হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা কাইছার আরও বলেন, উভয়পক্ষের বৈঠকের পর ইউএনও স্যারের সিদ্বান্তে প্রথমে বাঁধাদানকারী পক্ষ রাজি হলেও পরে কোন জায়গায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা যাবেনা বলে হুমকি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিদ্যালয়ের জমিদাতা পক্ষের প্রতিনিধি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আবছার সওদাগর প্রতিবাদ করেন। এরই জেরে বাঁধাদানকারী পক্ষের আইয়ুব মো ইকবাল এবং আবুল কালাম গংয়ের নেতৃত্বে তাদের লোকজন দলবদ্ধ হয়ে নুরুল আবছার সওদাগর ও তাঁর ছেলে নুরুল আজিমের উপর অতর্কিত হামলা করেন। হামলায় বাবা-ছেলে দুইজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
ঘটনার পরপর গুরুতর আহত অবস্থায় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল আবছার সওদাগরকে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ছেলে নুরুল আজিমের শাররীক অবস্থা অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে শহীদ মিনার নির্মাণে কোন অপশক্তির বাঁধা মেনে নেওয়া হবেনা। ভবিষ্যতে এইধরণের কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে এলাকাবাসি তাদের বিষদাঁদ ভেঙ্গে দিতে পিছপা হবেনা। তাই সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে বাঁধাদানকারী চক্রের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেইজন্য এলাকাবাসি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পাঠকের মতামত: